ৃড়হ
পাত্রী দেখতে এসেছি একরকম জোর করেই।কেননা, আমার মায়ের আসার কোনো ইচ্ছাই ছিল না।তার কারন,যেই মেয়েকে দেখতে এসেছি তার নাম গ্লেমা।ঘটকের মুখে গ্লেমা নাম শুনেই আমার মা হকচকিয়ে উঠেছেন।এ আবার কেমন বিচ্ছিরি নাম।অমন নামের মেয়ে দেখতে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।তবুও,আমি জোরাজুরি করে নিয়ে এসেছি। পাত্রপক্ষকে যতটা খাতির যত্ন করা উচিত তার বিন্দু পরিমাণও গ্লেমার পরিবার করলো না।শুকনো ধরনের হাসি দিয়ে বসিয়ে রাখলো প্রায় আধাঘণ্টা।এরপর বাড়ির ১জন কাজের লোক চা নিয়ে এলো।সেই চাও আবার ঠান্ডা।মা আমার দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছিল যেন আমাকে চোখের মধ্যে ঢুকিয়েই ফেলবে।আমারও খানিকটা রাগ হলো।পাত্র হিসেবে কি আমি এতোটাই নগন্য?
যাইহোক, অনেক অপেক্ষার পর গ্লেমার দেখা মিললো।গাঢ় নীল ১ টা শাড়ি পরে সে আমাদের সামনে এসে বসলো।তার চুলে বেলী ফুলের গাঁজরা।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।একটা মানুষ এতোটাও সুন্দর হতে পারে! বিশেষ করে ওর চোখ।গাঢ় নীল রঙের। বাঙালিদের চোখ কি অমন হয়?
আমরা চলে আসার সময় ওর বাবা গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। আন্তরিকভাবে বললেন, দুঃখিত।আসলে আজ বাসায় মেয়েটার মা ছিল না।তাই, আপনাদের আপ্যায়ন করতে পারলাম না ভালো মতো।
আমি বললাম,আরে ঠিকাছে।
বাড়ি ফিরে মা আমার উপর তুমুল চেঁচামেচি করলেন কারন,আমি গ্লেমাকে বিয়ে করার কথা বলেছি তাই।
বড় আপা জিজ্ঞেস করলো,মেয়ে দেখতে কেমন?
আমি বললাম, অপরূপা,নীল-নয়না।
আমার কথা কেড়ে নিয়ে মা বললো,হ্যাঁ, বিড়ালের মত চোখ।দেখলে ভয়ে বুক কাঁপ দেয়।আর মরা লাশের মতো সাদা।সাদা শাড়ি পরলে মানুষ ভাববে কাফন পেঁচানো লাশ।ভদ্রতা-সভ্যতাও নেই।কোনো সালাম-টালাম না দিয়ে ঘরে ঢুকে ধুপ করে বসে পরলো।কি মেয়ে ছিঃ ছিঃ।
মায়ের কথায় আমি খানিকটা আহত হলাম।
মা অন্য মেয়ে দেখার তোরজোর শুরু করলো। কিন্তু, আমি বেঁকে বসলাম।গ্লেমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না।
একমাস পরে আমার ফ্লাইট। মায়ের ইচ্ছা বিদেশে একেবারে বউ নিয়েই যেন যাই । যাইহোক, অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে মা'কে রাজি করালাম।
সেই সিদ্ধান্ত যখন গ্লেমার বাবাকে জানালাম, তিনি অবাক হয়ে বললেন,সত্যিই তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছো?
আমি বললাম,না হলে বলছি কেন....
তিনি আরো অবাক হলেন। বললেন,তাহলে আগামী কালই বিয়ে হয়ে যাক ।কি বলো?
আমি অবাক হয়ে বললাম,এতো দ্রুত?আমি তো এখনো গ্লেমার সাথে আলাদা করে কথাও বললাম না।
তিনি বললেন,শুভ কাজে দেরি করতে নেই।আর বিয়ের পর তো সারা জীবন পরেই রইলো কথা বলার জন্য।
অবশেষে, ঘরোয়া ভাবেই আমাদের বিয়ে হলো।
সবই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু, বিয়ের পর যখন সবাই বললো, এবার বর-বউ এর কয়েকটা সুন্দর ছবি তোলার পালা।তখন গ্লেমা ঘোর আপত্তি করতে লাগলো,সে ছবি তুলবে না। অনেক জোরাজুরি করেও কাজ হলো না।বরং,সে কান্না করে দিল,সে কিছুতেই ছবি তুলবে না।এতে উপস্থিত সবাই খানিকটা বিরক্ত হলো।আমারও অবাক লাগলো,ছবি তুলতে না চাওয়ার কারণ কি?
বিয়ের ২ দিন পর ঘটলো, আরেক অদ্ভুত ঘটনা।
মা আমাকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে বললেন,শাহীন তোর বউ তো মানুষ না।
মায়ের কথায় আমি বিরক্তির চূড়ান্ত হলাম। বললাম,তবে কি এলিয়েন?
মা মুখ ফ্যাকাশে করে বললেন,ও ১ টা মরা মানুষ।
এবার আমি হেসে ফেললাম।
আমাকে হাসতে দেখে মা আরো ফ্যাকাশে হয়ে গেলেন। বললেন,তোর বউয়ের গ্রামের বাড়ির মেয়ে হলো অমির মা।(অমির মা পাশের বাসার আন্টির বাড়িতে কাজ করে)
আমি বললাম,তাতে কি?
মা বললো,তোর বউয়ের যখন ১২-১৩ বছর বয়স তখন নাকি সে শ্বাসকষ্ট হয়ে মারা গেছিলো।
আমি বললাম,মারা গেলে সে আমার সাথে থাকছে কিভাবে?
অমির মা নামক মহিলার ভাষ্যমতে,গ্লেমা মারা গিয়েছিল।এটা নিশ্চিত হয়ে সবাই যখন কবর -টবর খুড়ে ফেলেছে।এমনকি খাটিয়ার মধ্যে তাকে শোয়ানো হয়েছে তখন সে চিৎকার করে উঠেছিল।
এমন গাঁজাখুরি গল্প শুনে আমি হাই তুললাম।
অমির মা জোর দিয়ে বললো,ওদের গ্রামে গিয়ে অন্যদের জিজ্ঞেস করতে।গ্লেমা নাকি ২য় বার বেঁচে ওঠার পর আকস্মিক ভাবে বদলে গেছে। চুপচাপ হয়ে গেছে। চোখের রংও নাকি বদলেছে।
আমি এসব কিছুই পাত্তা না দিয়ে ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলাম।
চলে আসার দিনও মা কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন,এই মেয়ের গা,হাত পা এতো ঠান্ডা কেন মরা মানুষের মতো...তুই ওর থেকে সাবধানে থাকিস।
আমি হেসে মাকে জড়িয়ে ধরে ফেললাম।কি উদ্ভট দুশ্চিন্তার কারণ।
অবশ্য,এটা সত্যি গ্লেমার শরীরের তাপমাত্রা অনেক কম।
তাই বলে তো আর সে মরা মানুষ না।
আমাদের ২ জনের নিউ জার্সিতে খুব সুন্দর ১টা সংসার হলো।গ্লেমাকে আমি ডাকতাম নীলাঞ্জনা। শুধু তার নীল চোখের জন্য নয় বরং সে সবসময় শুধু নীল রঙের ড্রেসই পরতো।
খুব গোছানো মেয়ে ছিল সে। চুপচাপ,ধীর-স্থির।
ভীষণ ভীষণ ভালোবাসতাম আমি ওকে।
তবে আস্তে আস্তে ওর মধ্যে থাকা কিছু অদ্ভুত অদ্ভুত ব্যাপার আমার চোখে পরলো। সেগুলো একাধারে যেমন অদ্ভুত তেমন ভয়ানকও।
যেমন, একদিন রাতে গ্লেমা আর আমি শুয়ে আছি।বাইরে হঠাৎ ঝড় বইতে শুরু করলো। আমি শুয়ে শুয়ে বই পড়ছি।তো,গ্লেমাকে বললাম,জানালাটা বন্ধ করে দাও ,ঝড় আসছে।
আমার হঠাৎ খেয়াল হলো,গ্লেমা জানালাটা বন্ধ করেছে কিন্তু সে ওঠেই নি।
মানে Prrbook
Upworkmarket
postmaster
topguru
monstarpublic
usamarking
powerbank
cutly
Redifiv
bookstar
link Youtubbook
tumblrro
Postmind
Probook
SocialMarking
Prrmarsub
Hastagcode
Wortweb
wwwsmbook
quora-answer
curred-add
wordpress-wo
classifiedsa
Top-Backlinks
Aliexpress
Twin-M
F-s-a-m-f
Gabsocialm
Temp Mail
জানালা খাট থেকে খানিকটা দূরে।খাটে বসে নাগাল পাওয়া যায় না।
কিন্তু,গ্লেমা খাট থেকেই জানালা বন্ধ করেছে।
অবশ্য ,এইটা গ্লেমা স্বিকার করলো না।সে বললো,সে খাট থেকে নেমেছে। কিন্তু,বই পড়ার নেশায় আমি খেয়াল করি নি।কে জানে হয়তো তাই।
আরেক টা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করলাম,গ্লেমা আমার মা বা অন্য কারো সাথে অডিও কলে কথা বলে।মা যখন ভিডিও কলে আমার সাথে কথা বলে,গ্লেমা তখন ধারে কাছেও থাকে না।
১ দিন আমি বসে বসে এয়ারফোনে গান শুনছি ।আর গ্লেমা আমার ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়ে ফুলদানি পরিষ্কার করছে। তখন,আম্মু ভিডিও কলে আসলো।
কিন্তু,গ্লেমা ব্যাপারটা বুঝে নি বিধায় নড়লো না ওখানে থেকে।
মা,আমাকে জিজ্ঞেস করল,কি লে তোর বউ কই?
আমি বললাম, পিছনেই তো।
মা বললো,কই তোর পিছনে তো কেউ নেই।
আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি গ্লেমা আছে। কিন্তু, ততক্ষণে ও বুঝতে পারল ভিডিও কলে কথা বলছি।
ও দ্রুত সরে গেল।
আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। আসলেই কি ওর মধ্যে প্যারানরমাল কিছু আছে?
আরেক দিন কিচেনে রান্না করতে গিয়ে ওর হাত কেটে গেছে।ও তড়িঘরি করে একটা সাদা রুমাল দিয়ে হাত বাঁধলো।আমি কিচেনে এসে বললাম,আসো এন্টিসেপটিক লাগিয়ে দিই।
আমার কথা শুনে ও ভয়ে এতো টুকু হয়ে গেল।
যেনো আমি খুব ভয়াবহ কিছু বলেছি।
হঠাৎ,ওর হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি রুমাল টার বেশ খানিকটা অংশ নীল রঙের হয়ে গেছে।
ও তাড়াতাড়ি হাতটা ওড়নার নিচে লুকিয়ে ফেলল।
আমি অবাক হলাম,কাটা হাতের রক্তে রুমাল লাল হওয়ার কথা, কিন্তু নীল রং এলো কোত্থেকে?
.
.
.
গল্পঃনীল নয়
Comments
Post a Comment